![]() |
Password |
খুব জোর বৃস্টি হয়ে এই সবে থেমেছে। এখন ও টুপ্ টাপ করে সান সেটের উপর থেকে জানালার বাইরে ঝরছিলো বৃষ্টির জল ,রাত সাড়ে বারোটা বাজে ,আমার ঊনষাট নম্বর ব্লগের ক্লাইম্যাক্স লিখ ছিলুম(https://www.kakolib.com/2019/06/easy-money-kaamalo-jaani.html) ,এ.সি বন্ধ করে ফ্যান চালিয়ে জানালা খুলে দিয়েছি। ঘরে ঠান্ডা হাওয়া আসছে। ল্যাপটপ অন করতে পারছিলাম না ,password ভুলে গেছি ,এই কাঙ্খিত বর্ষা র আনন্দ মাথা টা খালি করে দিয়েছে যেন - বাইরে ধড়াম করে জোর শব্দ! সঙ্গে সঙ্গে বাইকের প্রচন্ড আওয়াজ। পাশের ঘর থেকে বৌ ছেলে বেরিয়ে এলো ,জানালা দিয়ে দেখি -কেউ এক জন পরে আছে রাস্তায় ,দরওয়াজা খুলে ছুটে বাইরে বেরোলাম ,গাড়ির আরোহী দূরে পড়ে। রাস্তা অন্ধকার ,ঠিক মতো বুঝতে পারছিলাম না ,যে পরে সে কে ?আমাদের বিল্ডিং টা রাস্তার ধারেই ,আর যাদের ফ্ল্যাট রাস্তার দিকে তারা উঠে পড়েছে ,দু চার জন নেমে এসেছে ,কারো হাথে টর্চ ছিলো ,অনেকেই মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়েছে।
গাড়ির চাবি বন্ধ করেছে আমার ছেলে ,যে পরে আছে তার বয়স ২৪-২৫ হবে ,চিৎ হয়ে পড়ে ,মাথার পিছন থেকে রক্ত বইছে ,হাত,পা কেটে গাছে অনেক তা করে। তারাতাড়ি করে ফ্রিজ থেকে বরফ এনে লাগানো হলো। ডেট্টল লাগানো হলো মাথার পিছনে ,কিন্তু ছেলেটার কোনো হুশ নেই ,বর্ষার কাদা শরীর ময় লেগে। শরীর থেকে কাঁচা মদের গন্ধ বেরোচ্ছে ,পুরো ইনটক্সিকেটেড হালাত। মাথায় জল ঢালতেও সারা নেই ,শুধু গোঁ গোঁ করছে।
কাদের ছেলে,কোথায় থাকে ?বাড়ির লোকেদের খবর দেব কি করে ?কাদার উপর হঠাৎ দেখি ছেলেটার মোবাইল পড়ে ,যদি বাড়ির লোক কে খবর দিতে পারি ভেবে ফোন টা নিলুম। অন হলো কিন্তু লক হয়ে আছে ,পাস ওয়ার্ড দেয়া ,খুলবে কি করে ভাই ?এই পাসোয়ার্ড এরা যে কেন দেয় ?কি লুকোতে চায় কে জানে ,ছেলে কে বললুম তোমাদের এই পাস ওয়ার্ড কি সর্বনাশের জিনিস দেখছো ?ফোন আছে কিন্তু সংবাদ দিতে আটকাচ্ছে কে না ওই পাস ওয়ার্ড !
ছেলে কে ভাষণ দিয়ে বেশ ভালো লাগছে নিজের ,যারা যার হয়েছে তারাও কয়েক জন সাপোর্ট করলেন আমায়। পুলিশ এ খাবার দেয়া হবে বলে ঠিক করলাম আমরা ,হঠাৎ ফোন তা বাজে ওঠে। আমি তাড়াতাড়ি করে ফোন তা ধরি ,ওদিকে ছেলেটির মা ফোন করেছেন ,আমি বলি -আপনার ছেলে পূর্বপাড়া তে এক্সিডেন্ট করেছে ওর বাইক নিয়ে। জ্ঞান এসেছে ,কিন্তু ডাক্তার দেখাতে হবে আপনি আসুন তাড়াতাড়ি।আপনারা থাকেন কোথায় ?যে ঠিকানা বলেন ,সেটা স্টেশন এর কাছে ,আমাদের বিল্ডিং থেকে দশ মিনিট এর পথ , ছেলেটির মা কান্না কাটি শুরু করেন ফোনেই।
এদিকে ছেলেটি --তার ফোন চেয়ে চলে,তাকে ফোন দেয়া হয় ,ফোন করবার চেষ্টা করে ,বিড় বিড় করে বলে --"শা ......ফোন তো খুলছেই না" ,এলকোহল ওর সব স্নায়ু গুলো কে শাসন করতে পারছে না ,দুটি গাড়ি এসে থামে,এক মহিলা ও তিনজন পুরুষ নেমে আসেন ,রকে বসিয়ে রাখা ছেলেটির কাছে ছুতে যান। আমাদের কাছে বলতে থাকেনকি হয়ে ছিল ,ছেলেটি হঠাৎ বলে-মা এরা আমায় মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে ,ওর মা আর সঙ্গীদের চাউনী বদলে গেল ,আমাদের বললেন কেন মেরেছি ওকে ?
https://www.kakolib.com/2019/01/swarger-path.html
আমরা সবাই অবাক হয়ে গেলাম !আমরা চেঁচিয়ে বললুম আপনার মাতাল ছেলের কথা বিশ্বাস করছেন ,আমরা ওকে তুলে যত্ন না করলে ,আরো বড় ক্ষতি আপনার হয়ে যেতো ,যান চলে যান এখন থেকে। সবাই যখন চিৎকার করছে এই অবাক করা মন্তব্য শুনে ,আমি তখন আমার ঘরে ঢুকে পড়ছি ,আর ভাবছি---ছেলেটির জীবনের পাসওয়ার্ড হলো 'মিথ্যা চার ' ..........
এটি একটি বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে। আপনাদের মন্তব্য পাঠান ,ভালো লাগবে আমার।
No comments:
Post a Comment